Tag: উদ্দেশ্যে

  • ইসলামের দৃষ্টিতে যেসকল পরিস্থিতিতে হাসতে মানা

    ইসলামের দৃষ্টিতে যেসকল পরিস্থিতিতে হাসতে মানা

    হাসতে মানা, এমনটা কি হয় কখনও? মানুষের সাথে চলাফেরা, উঠবস, কথাবার্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে হাসিখুশি থাকা এবং মুচকি হেসে কথা বলা নি:সন্দেহে আকর্ষণীয় ও সুন্দরতম চরিত্রগুলোর অন্যতম। মৃদ হাসি মানুষের ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এটি দেহ ও মন উভয়ের জন্যই ভালো। তাই তো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে মুচকি হাসিকে ‘সদকা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।


    আবু যর রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    تبسمك في وجه أخيك لك صدقة

    “তোমার অপর ভাইয়ের সম্মুখে তুমি মুচকি হাসি দিলে, তা সদকা হিসেবে পরিগণিত হবে।”

    (সহীহ তিরমিযী, হা/১৯৫৬)

    এবং তিনি নিজেও অধিকাংশ সময় মুচকি হাসতেন এবং হাসি-খুশি জীবন যাপন করতেন।

    এ ছাড়া অবস্থা অনুযায়ী ও প্রসঙ্গক্রমে মাঝেমধ্যে হাসা দূষণীয় নয়। মাঝেমধ্যে উচ্চ আওয়াজেও হাসা যায়। তবে অপ্রয়োজনীয় হাসাহাসি করা, যত্রতত্র হো হো করে অট্ট হাসিতে ফেটে পড়া এবং গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক ভাবে হাসাহাসি করা অবশ্যই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তির জন্য অশোভনীয় আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে শরিয়তের দৃষ্টিতে গর্হিত কাজ হিসেবে বিবেচিত।

    ◯ যে সকল ক্ষেত্রে হাসতে মানা

    ✓ ক. সালাত রত অবস্থায়
    ✓ খ. কবর যিয়ারত করতে গিয়ে
    ✓ গ. আল্লাহর নিকট দুআ করার সময়
    ✓ ঘ. যে কোন ইবাদত করার সময়
    ✓ ঙ. রোগাক্রান্ত ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে দেখে,
    ✓ চ. কাউকে উপহাস, টিটকারি বা হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে হাসা ইত্যাদি।

    ◯ যখন হাসাহাসি শিষ্টাচার পরিপন্থী ও ব্যক্তিত্বহীনতার বহিঃপ্রকাশ:

    ✓ ক. সভা, মাহফিল, বৈঠক বা ক্লাসে থাকা অবস্থায় পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির সাথে বা ফোনের মাধ্যমে অন্যের সাথে গল্পগুজব, হাসি-মজাক ও দুষ্টোমিতে লিপ্ত থাকা সামাজিক দৃষ্টিতে দূষণীয় ও শিষ্টাচার পরিপন্থী।
    ✓ খ. গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানিত ব্যক্তির সাক্ষাতে এসে বা তাদের উপস্থিতিতে হাসাহাসি করা বেয়াদবি।
    ✓ গ. স্বাভাবিক অবস্থায় যখন-তখন উচ্চস্বরে অট্টস্বরে হাসা ব্যক্তিত্বহীনতার প্রমাণ।

    আরও পড়ুনঃ উঁচু আওয়াজে অতিরিক্ত হাসার কুফল

    সুতরাং পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী হাসুন, হাস্যোজ্জল থাকুন, মুচকি হাসায় অভ্যস্ত হোন এবং সুন্দর হাসিতে জয় করুন মানুষ মন, জয় করুন বিশ্ব-ভূবন। আর অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত হাসাহাসি, উপহাস মূলক হাসি বা যত্রতত্র অট্টহাসি থেকে দূরে থাকুন আর রক্ষা করুন ব্যক্তিত্ব ও আত্মমর্যাদা।

    আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন।

    উত্তর প্রদানেঃ
    আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
    (লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
    দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা