Tag: ভালোবাসা

  • স্ত্রীকে আদর করে বিভিন্ন নামে ডাকা

    স্ত্রীকে আদর করে বিভিন্ন নামে ডাকা

    আদর করে অনেকেই নিজের স্ত্রীকে অনেকেই নানান নামে ডাকেন। এ বিষয়ে অনেক সময় অনেককে অনাপত্তি দিতেও দেখা যায়। এ বিষয়ে ইসলাম কি বলে? ইসলামে কি স্ত্রীকে আদর করে ভিন্ন নামে ডাকা যাবে?

    প্রশ্ন: স্ত্রী কে জান, কলিজা, পাখি ইত্যাদি বলে সম্বোধন করা যাবে কি?

    উত্তর: আমাদের অজানা নয় যে, গভীর ভালোবাসা ও প্রেমের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ জাতীয় শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়।

    সুতরাং স্ত্রীর উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহারে কোন অসুবিধা নেই ইন শা আল্লাহ। অনুরূপভাবে যে সকল নাম, শব্দ বা প্রশংসা মূলক বাক্য শুনলে স্ত্রী খুশি হয় তার উদ্দেশ্যে সেগুলো ব্যবহার করতেও কোন আপত্তি নাই বরং উত্তম যদি তাতে শরিয়া বিরোধী কোনও কিছু না থাকে।

    আদর করে স্ত্রীকে বিভিন্ন নামে ডাকার দলিল

    নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মা জননী আয়েশা রা. কে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে সম্বোধন করতেন।

    হাদিসে এমন মোট ৬টি নাম/উপনাম পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মা আয়েশা রা. কে সম্বোধন করেছেন। যেমন:

    ✪ ১) আয়েশ (আয়শাহ থেকে শ এর পর আকার অতঃপর হ অক্ষর বিলুপ্ত করে সংক্ষেপে আয়েশ)।

    ✪ ২) হুমায়রা (লাল রঙ্গের পাখি বিশেষ)।

    ✪ ৩) ইবনাতুস সিদ্দিক/বিনতুস সিদ্দিক (সিদ্দিক এর মেয়ে)।

    ✪ ৪) ইবনাতু আবি বকর/বিনতে আবি বকর (আবু বকরের মেয়ে)।

    ✪ ৫) মুওয়াফফাকাহ (আল্লাহর পক্ষ থেকে তওফিক প্রাপ্তা)।

    ✪ ৬) উম্মে আব্দুল্লাহ (আব্দুল্লাহর মা-যদিও তার কোন সন্তান ছিলো না)।

    নি:সন্দেহে প্রেম পূর্ণ ও আদর মাখা সম্বোধন দাম্পত্য জীবনে ভালবাসা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এবং স্ত্রীর সাথে ‘সুন্দর আচরণ ও সদ্ভাবে জীবন-যাপন’ এর অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাআলা বলেন,

    وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ

    “আর তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর”

    সূরা নিসা: ১৯

    আল্লাহু আলাম।

    উত্তর প্রদানেঃ
    আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
    (লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
    দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।


  • ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করা যাবে কি?

    ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করা যাবে কি?

    ভালবাসা দিবস সম্পর্কে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের ফতোয়া

    ফতোওয়াটি সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদে বিশ্লেষণের পর এই মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে যে, কুরআন সুন্নাহর স্পষ্ট প্রমাণাদি দ্বারা এ কথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, ইসলামে ঈদ বা উৎসবের দিন মাত্র দু’টি। সালাফে সালেহীনগণও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। ইসলামে স্বীকৃত ঈদ দুটির একটি হল ঈদুল ফিতর, অপরটি হল ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ।

    উল্লিখিত ঈদ দু’টি ব্যতীত যত ঈদ বা উৎসব আছে, হোক না তা কোন ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত, বা কোন গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত, বা কোন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত, তা বিদআত। মুসলমানদের তা পালন করা বা পালন করতে বলা বৈধ নয় এবং এ উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ করা ও এ ব্যাপারে কিছু দিয়ে সাহায্য করাও নিষেধ। কেননা এ ধরনের কাজ আল্লাহ তা’আলার সীমা লঙ্ঘন বৈ অন্য কিছু হবে না। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করবে সে নিজের উপর অত্যাচার করবে।

    এ ধরনের কালচার বিধর্মীদের অনুসরনের কল্পে গ্রহণ করা হলে অপরাধ আরো মারাত্বক হবে। কারণ এর মাধ্যমে তাদের সদৃশ্যতা গ্রহণ করা এবং তাদেরকে এক ধরনের বন্ধু বানানো হয়। অথচ আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে এ থেকে বারণ করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,   من تشبه بقوم فهو منهم  যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্যতা অবলম্বন করল সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য। ভালবাসা দিবস পালন করাও এ নিষেধের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এটি খৃষ্টানদের উৎসব।

    যে মুসলমান আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে তার জন্য এ কাজ করা দেয়া বা এই দিনে কাউকে ফুল বা অন্যকোনো উপহার দেয়া বৈধ নয়। বরং তার কর্তব্য হল আল্লাহ এবং তার রাসূলের হুকুম পালন করা এবং আল্লাহর শাস্তি ও গযব আসে এমন কাজ থেকে নিজে দূরে থাকা ও অন্যদের দূরে রাখা।

    অতএব এ দিবসকে কেন্দ্র করে পানাহার করা, ক্রয়-বিক্রয় করা, কোন কিছু প্রস্তুত করা বা উপঢৌকন দেয়া, চিঠি-পত্র চালাচালি করা ও প্রচার-পত্র বিলি করা অবৈধ। এ সমস্ত কাজের মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানি করা হয়।

    আল্লাহ তা’আলা বলেন, (وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ) المائدة2

    সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (আল মায়িদাহ – আয়াত ২)

    ফতোয়া নং ২১২০৩ তারিখঃ ২৩-১১- ১৪২০ হি

    ফতোয়াটি যারা সত্যায়ন করেছেন :
    সৌদি আরবের গবেষণা ও ফতোয়া প্রদান বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দঃ
    আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আলে শেখ
    সদস্য: সালেহ বিন ফাওজান আল-ফাওজান
    সদস্য: আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-গদইয়ান
    সদস্য: বকর বিন আব্দুল্লাহ আবু জায়েদ

    তথ্যসূত্রঃ ইসলামহাউজ.কম