Tag: মৃত্যু

  • অকাল মৃত্যু বলে কিছু নেই – বই ডাউনলোড

    অকাল মৃত্যু বলে কিছু নেই – বই ডাউনলোড

    মিডিয়ার বদৌলতে আজকাল অকাল মৃত্যু শব্দের সংক্ষে কমবেশি সবাই পরিচিত। মিডিয়ায় শব্দটির ব্যবহার এতই অবিরল যে সচেতন অনেক মুসলিমও শব্দটি অবচেতনে উচ্চারণ করে বসেন। কিন্তু এ বিষয়ে ইসলাম কি বলে? আসুন, আমরা জানি। বইটির পিডিএফ কপি ডাউনলোড করুন।

    বই ডাউনলোড

    লেখক : আলী হাসান তৈয়ব
    সম্পাদনা: মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী

  • মৃত্যু অতি নিকটে বুঝতে পারলে ১০ করণীয়

    মৃত্যু অতি নিকটে বুঝতে পারলে ১০ করণীয়

    প্রশ্নঃ কোন ব্যক্তি যদি বুঝতে পারে যে, কিছুদিনের মধ্য তার মৃত্যু হবে তাহলে তার করণীয় কী?

    উত্তরঃ মৃত্যু এক অবধারিত ও সুনিশ্চিত বিষয়। এখান থেকে পালানোর কারও সুযোগ নাই। কিন্তু কেউ জানে না, কার কখন কোথায় মৃত্যু সংঘটিত হবে। তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

    ۖ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا ۖ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ ۚ إِنَّ اللَّـهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
    “কেউ জানে না আগামীকাল সে কী উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।”

    সূরা লোকমান: ৩৪

    তবে কেউ যদি মারাত্মক অসুখ, শারীরিক জটিল অবস্থা বা বিশেষ পরিস্থিতিতে অনুভব করতে পারে যে, হয়ত সে জীবন সায়াহ্নে এসে উপনীত হয়েছে, ক্ষণকাল পরেই তার জীবনের সূর্য নিঃসীম অন্ধকারে হারিয়ে যাবে; আর কখনোই তা ফিরে আসবে না তাহলে তার উচিত, মৃত্যুর প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং জীবনের বাকি সময়টুকুকে অমূল্য সম্পদ মনে করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও গুনাহ মোচনের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা

    মৃত্যু নিকটে বুঝলে যা করণীয়ঃ

    এমন পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে অতি সংক্ষেপে ১০টি দিক নির্দেশনা তুলে ধরা হলঃ

    ১) পরম ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে নিজের অতীত জীবনের সকল গুনাহের কথা তুলে ধরে অনুতপ্ত হৃদয়ে নিখাদ চিত্তে তওবা-ইস্তিগফার করা।

    ২) আল্লাহর সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুর্বলতা ও অতীত জীবনে ঘটে যাওয়া ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলোকে যথাসাধ্য অধিক পরিমাণে নফল ইবাদত-বন্দেগি ও নেকির কাজ দ্বারা ভরপুর করে দেয়া।

    ৩) সাধ্যমত কুরআন তিলাওয়াত, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, দুআ, তাসবিহ ও জিকির-আজকার দ্বারা জিহ্বাকে সজীব রাখা।

    ৪) কবরের অন্ধকার, হাশরের ভয়াবহতা, জাহান্নামের মর্মন্তুদ শাস্তি ইত্যাদির ভয়ে আল্লাহর নিকট ক্রন্দন করা এবং তার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা।

    ৫) সর্বদা ওজু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করা।

    ৬) গল্প-গুজব, খেলা-ধুলা, বিনা দরকারে মোবাইল টিপা, টিভি দেখা এবং অনর্থক কথা ও কাজে সময় অপচয় না করা।

    ৭) কারো সাথে লেনদেন থাকলে তা দ্রুত সমাধান করা।

    ৮) কারো ’হক‘ নষ্ট করে থাকলে অনতিবিলম্বে তা মালিককে ফিরিয়ে দেয়া। কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে বা কারো প্রতি জুলুম-অত্যাচার করে থাকলে তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা বা তাকে ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং তার প্রতি কারো দাবি-দাওয়া ও অভিযোগ-অনুযোগ থাকলে বিষয়টি মিটমাট করে নেয়া।

    ৯) দান-সদকা করা। (তবে তার সম্পদের সর্বোচ্চ তিনভাগের একভাগ দান করতে পারে। এর বেশি দান করা শরিয়ত সম্মত নয়)

    ১০) মৃত্যুর পরে কী করণীয় সে বিষয়ে তার পরিবার বা উত্তরাধিকারী লোকজনকে দিক নির্দেশনা দেয়া ও ওসিয়ত করা।

    পরিশেষে দুআ করি, মৃত্যুর পূর্বে দয়াময় আল্লাহ যেন আমাদের সকল গুনাহ মোচন করে দেন। বেশি বেশি নেকির কাজ করে তাঁর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার তাওফিক দান করেন। এবং কবর, হাশর ও জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি থেকে রক্ষা করেন।

    আমীন।

    ▬▬▬▬◐◑▬▬▬▬
    উত্তর প্রদানে:
    আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
    দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

  • হঠাৎ মৃত্যু : ভালো না কি খারাপ?

    হঠাৎ মৃত্যু : ভালো না কি খারাপ?

    প্রশ্নঃ একজন মুসলিমের জন্য হঠাৎ মৃত্যু ভালো না কি খারাপ?

    উত্তরঃ হঠাৎ মৃত্যু ভালো ও মন্দ উভয়টাই হতে পারে। তা নির্ভর করছে ব্যক্তির অবস্থার উপরে।

    ➤ দ্বীনদারের হঠাৎ মৃত্যু

    সে যদি দ্বীনদার, সৎকর্মশীল ও তাকওয়াবান হয় তাহলে যে অবস্থায়ই মৃত্যু হোক না এটি তার জন্য কল্যাণকর। বরং হঠাৎ মৃত্যু (যেমন: দুর্ঘটনা বশত: মৃত্যু) তার জন্য আল্লাহর বিশেষ রহমত। কারণ এতে তাকে মৃত্যুর যন্ত্রণা ও কষ্ট পোহাতে হল না, রোগ-ব্যাধিতে পড়ে বিছানায় কাতরাতে হল না, অবস্থা নাজেহাল হল না, কারো প্রতি মুখাপেক্ষী হওয়ার প্রয়োজন হল না।

    এতে আল্লাহর কাছে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, গুনাহ মোচন হয় এবং দুনিয়ার সকল কষ্ট-ক্লেশকে বিদায় জানিয়ে সে রবের সন্তুষ্টি ও জান্নাতের দিকে এগিয়ে যায়। হাদিসে বর্ণিত হয়েছেঃ

    الْعَبْدُ الْمُؤْمِنُ يَسْتَرِيحُ مِنْ نَصَبِ الدُّنْيَا وَأَذَاهَا،
    “মুমিন ব্যক্তি যখন মৃত্যুবরণ করে এখন সে দুনিয়ার দুঃখ-কষ্ট থেকে নিষ্কৃতি পায়।”

    সুনানে নাসাঈ, অধ্যায়: জানাযা, অনুচ্ছেদ: মৃত্যুতে মুমিনের নিষ্কৃতি প্রাপ্তি. হা/১৯৩০-সহিহ

    ➤ নাফরমানের হঠাৎ মৃ্ত্যু

    পক্ষান্তরে সে যদি আল্লাহর নাফরমান ও পাপিষ্ঠ হয় তাহলে যে অবস্থায় মৃত্যু হোক কেন তা তার জন্য মহা বিপদের কারণ।

    বিশেষ করে হঠাৎ মৃত্যুর কারণে সে পাপাচার থেকে তওবা করার সুযোগ পেলো না, নিজের অবস্থা সংশোধন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হল, মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে পারলো না এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর ক্রোধ ও আযাবের দিকে ধাবিত হল।

    আয়েশা রা. ও আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. হতে বর্ণিত আছে তারা বলেনঃ

    أسف على الفاجر وراحة للمؤمن
    “(হঠাৎ মৃত্যু) পাপীর জন্য আফসোস আর মুমিনের জন্য নিষ্কৃতির কারণ।”

    মুসাননাফে ইবনে আবি শায়বা ৩/৩৭০ ও বায়হাকী ৩/৩৭৯

    উল্লেখ্য যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হঠাৎ মৃত্যু থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন মর্মে বর্ণিত হাদিসের সনদ সহিহ নয়।

    ফিরোযাবাদি রহ. বলেনঃ “এ বিষয়ে কোন সহিহ হাদিস নেই।” (সাফারুস সাআদাহ, পৃষ্ঠা নং ৩৫৩)

    উল্লেখ্য যে, হঠাৎ মৃত্যু কিয়ামতের একটি আলামত। যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

    حديث أنس بن مالك رضي الله عنه أن النبي -صلى الله عليه وسلم- قال : (إن من أمارات الساعة أن يظهر موت الفجأة)، رواه الطبراني وحسّنه الألباني.
    আনাস বিন মালিক রা. হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
    “কিয়ামতের একটি আলামত হল, ‘হঠাৎ মৃত্যু’ প্রকাশ পাওয়া।”

    ত্বাবারানী, শাইখ আলবানী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন

    আল্লাহু আলম।

    পরিশেষে আল্লাহর নিকট দুআ করি, তিনি যেন, আমাদেরকে এমন ঈমান ও আমলের উপর মৃত্যু দান করেন যা দ্বারা আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ক্ষমা অর্জন করতে পারি। নিশ্চয় তিনি পরম করুণাময় ও অতিশয় ক্ষমাশীল।

    ▬▬▬◄◉►▬▬▬
    উত্তর প্রদানে:
    আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
    জুবাইল, সৌদি আরব