Tag: লেকচার

  • যে আলেম থেকে ইলম গ্রহণ বৈধ

    যে আলেম থেকে ইলম গ্রহণ বৈধ

    আমি কোন আলেম থেকে ইলম গ্রহণ করতে পারবো? মানহাজ গোপনকারী আলেম থেকে ইলম গ্রহণ কি সঠিক হবে? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি।

    উত্তরঃ নবীদের রেখে যাওয়া আদর্শের কাণ্ডারি হল একমাত্র আলেমগণ। তারাই ইলমে নব্বীর উত্তরসূরি। আলেমগণই সবচেয়ে বেশী আল্লাহকে ভয় করে। দীনের জ্ঞানার্জন করতে হলে আমাদেরকে তাদের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য মহান আল্লাহ নির্দেশ প্রদান করেছেন।

    কিন্তু কীভাবে জানবো সেই প্রত্যাশিত আলেম কে যার নিকট থেকে ইলম অর্জন করলে বা যার আদর্শকে ফলো করলে আমরা দীনের উপর অটুট থেকে আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছুতে সক্ষম হব?

    সঠিক আলেমদের বৈশিষ্ঠ্যঃ

    হ্যাঁ, সেই আদর্শ আলেমে রব্বানীর পরিচয় পেতে আমাদেরকে নিন্মোক্ত মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল করতে হবে:

    ✅ ১) যিনি বক্তৃতা, লিখনি, সভা, সমাবেশ, আলোচনা, মাহফিল সর্বত্র সবচেয়ে বেশী তাওহীদের প্রতি গুরুত্ব দিবেন এবং শিরক থেকে সাবধান করবেন। এটিই নবী-রসূলগণের প্রধানতম কাজ ছিল।

    ✅ ২) যিনি ছোট-বড় সকল সুন্নতকে সম্মান করবেন।

    ✅ ৩) যিনি ইলম অনুযায়ী আমল করার চেষ্টা করবেন, মানুষকে সে দিকে আহবান করবেন এবং এ পথে ধৈর্য ধারণ করবেন।

    ✅ ৪) যিনি হেকমত ও উত্তম পন্থায় হকের কথা বলবেন এবং তার উপর অবিচল থাকবেন।

    ✅ ৫) যিনি সকল প্রকার শিরক ও বিদয়াত থেকে মানুষকে সতর্ক করবেন।

    ✅ ৬) যিনি মানুষকে সালাফে-সালেহীনের আদর্শের আলোকে দ্বীন-ইসলাম মেনে চলার প্রতি উদ্বুদ্ধ করবেন।

    ✅ ৭) যিনি কুরআন-হাদিসের দলীলের আলোকে কথা বলবেন এবং বিশেষ কোন মাযহাব, দল, মতবাদ, ইমাম, পীর বা অন্য কারো কথা কুরআন-সুন্নাহর বিপরীত প্রমাণিত হলে তা পরিত্যাগ করে দলীলের দিকে ফিরে আসতে কোনরূপ দ্বিধা করবেন না।

    মহান আল্লাহ যেন আমাদের দীনের সঠিক ইলম অর্জন করে দুনিয়া ও আখিরাতে চূড়ান্ত সাফল্য দান করেন এবং উভয় জগতে ফিতনা ও বিপর্যয় থেকে হেফাজত করেন আমীন।
    আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন।

    মানহাজ গোপণকারী আলেমঃ

    প্রশ্নঃ অনেক আলেমের লেকচার শুনে বুঝতে পারি না তাদের মানহাজ কি? তাদের লেকচার কি শোনা যাবে?

    উত্তরঃ মুক্তিকামী ও সত্যান্বেষী মানুষের জন্য আবশ্যক হল, যথাসম্ভব নির্ভরযোগ্য ও আকীদা-মানহাজে (বিশ্বাস ও নীতিতে) সালাফে-সালেহীনের আদর্শের অনুসারী আহলুল ইলম বা দ্বীন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখেন এমন আলেমদের বক্তব্য শোনার বা তাদের লিখনি পড়ার।

    কোন সন্দেহ পূর্ণ ও অজ্ঞাত ব্যক্তির বক্তব্য শোনা বা লিখুনি পড়া উচিৎ নয়। কেননা, এমন লেখক ও বক্তারা সুন্দর সুন্দর কথার ফাঁকে বিষ ঢেলে দেয় কিন্তু সাধারণ পাঠক/শ্রোতারা বুঝে উঠতে পারে না।

    অবশ্য, যারা তাদের আকীদা ও মানহাজ (বিশ্বাস ও নীতি-আদর্শ) গোপন রাখে সময়ের ব্যবধানে তা অবশ্যই প্রকাশিত হয়ে যায়। কেউ তার বিশ্বাস ও নীতি-আদর্শ স্থায়ীভাবে গোপন রাখতে পারে না।

    বর্তমানে বহু মানুষ ইউটিউবে বক্তার সুর, কণ্ঠ, বাগ্মিতা বা বাকপটুতা দেখে মুগ্ধ হয় তার ভক্ত হয়ে যায় এবং অন্ধের মত তাকে অনুসরণ করতে থাকে। পরে দেখা যায়, তার আকীদা-বিশ্বাস ও রীতি-মানহাজ ত্রুটিপূর্ণ। কিন্তু অন্ধভক্তি ও গোঁড়ামির কারণে সেখান থেকে ফিরে আসা কঠিন হয়ে যায়।

    তাই হেদায়েত ও সঠিক দ্বীন অর্জন করতে হলে অবশ্যই নির্ভরযোগ্য বিশুদ্ধ আকীদা ও মানহাজের অনুসারী আহলে ইলম থেকে জ্ঞানার্জন করার চেষ্টা করতে হবে।

    তবে মনে রাখা আবশ্যক, পৃথিবীতে কোন মানুষই ১০০% নির্ভূল নয়। হকপন্থী মানুষের পরিচয় হল, যখনই তার ভুল ধরিয়ে দেয়া হয় বা তাকে সংশোধনী দেয়া হয় তখন দ্বীনের স্বার্থে ব্যক্তিগত মান-সম্মান ও পদমর্যাদার দিকে না তাকিয়ে নিজেকে দ্রুত সংশোধন করে নেয়।

    প্রবাদ রয়েছেঃ “ভুল করা দোষণীয় নয়; দোষণীয় হল, ভুল থেকে ফিরে না আসা।”

    শিশুদের ইসলাম ও তাওহিদ শিক্ষার ১১ উপায়

    আল্লাত তাআলা আমাদেরকে হকপথের সন্ধান দিন এবং হকের উপর আমরণ অবিচল থাকার তওফিক দান করুন। আমীন।

    উত্তর প্রদানেঃ
    আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
    (লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
    দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।