প্রশ্নঃ আমাদের সমাজে একটি কথা প্রচলিতে আছে যে, যদি কোনও বাড়িতে যদি অন্তঃসত্ত্বা নারী থাকে তাহলে সে বাড়িতে সে বছর কুরবানি দেয়া যাবে না; অন্যথায় গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে এই কথার ভিত্তি কি? এটি কি আসলেই গ্রহণযোগ্য একটি কথা?
উত্তরঃ “বাড়িতে গর্ভবতী নারী থাকলে কুরবানি করা যাবে না। অন্যথায় এতে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হতে পারে” এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কুসংস্কার পূর্ণ কথা। কুরআন ও হাদিসে এ মর্মে কোন বক্তব্য আসে নি। সুতরাং তা ভিত্তিহীন ও শরিয়ত বর্হিভূত কথা-তাতে কোন সন্দেহ নাই।
এ কথার সাথে ইসলামের সম্পর্ক আছে কি?
মূলত: বাড়িতে অন্ত:স্বত্বা নারী থাকার সাথে কুরবানি করা বা বাড়িতে পশু জবেহ করার কোন সম্পর্ক নাই। কারোও যদি কুরবানি দেয়ার সামর্থ্য থাকে তাহলে সে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কুরবানি দিবে কিংবা প্রয়োজনবোধে যে কোন সময় গোস্ত খাওয়ার জন্য হালাল প্রাণী জবেহ করবে।
উক্ত কুরবানি বা হালাল প্রাণীর গোস্ত অন্তঃসত্ত্বা নারী সহ যে কেউ অনায়াসে ভক্ষণ করতে পারে-আলহামদু লিল্লাহ।
কেউ যদি এমন কথা বিশ্বাস করেঃ
“বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা থাকলে সে বাড়িতে পশু জবেহ করা অশুভ বা এতে গর্ভস্থ সন্তানের অমঙ্গল হয়” এ জাতীয় বিশ্বাস সম্পূর্ণ যুক্তিহীন, কুসংস্কার এবং শিরক। শুধু তাই নয়, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও তা অগ্রহণযোগ্য। সুতরাং কোন মুসলিমের জন্য এ জাতীয় কুসংস্কারে বিশ্বাস রাখা বৈধ নয়।
মুসলিমদের বৃহত্তর জাতীয় উৎসবে কুরবানির মত এত মর্যাদাপূর্ণ একটি ইবাদত থেকে দূরে রাখার জন্য এ জাতীয় ভ্রান্ত বিশ্বাস প্রচার শয়তানের কূটকৌশল হতে পারে।
আমাদের করণীয়ঃ
সুতরাং কারো মনের মধ্যে এ জাতীয় মনোভাব জাগ্রত হলে সে যেন, ভয়ে-আতঙ্কে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়ন থেকে পেছনে সরে না আসে বরং আল্লাহর উপর ভরসা করে নিজ কাজ সম্পন্ন করে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে নেক কাজ সম্পন্ন করার তওফিক দান করুন এবং সব ধরণের ভ্রান্ত বিশ্বাস, কুসংস্কার ও শয়তানি প্ররোচনা থেকে আমাদেরর ঈমান ও আমলকে হেফাজত করুন। আমিন।
প্রশ্ন: স্ত্রী গর্ভবতী হলে স্বামী কি পশু জবেহ করতে পারে কি না?
উত্তরঃ স্ত্রী গর্ভবতী হলে স্বামীর পশু জবেহ করার সাথে তার কোন সম্পর্ক নাই।
সুতরাং এ অবস্থায় স্বামী গরু, ছাগল, হাস-মুরগি ইত্যাদি নির্দ্বিধায় জবেহ করতে পারে। এতে তার স্ত্রীর গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি বা অমঙ্গল হবে এ জাতীয় বিশ্বাস কুসংস্কার ছাড়া অন্য কিছু নই।
আরও পড়ুনঃ সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে যা করণীয়
আল্লাহু আলাম।
উত্তর প্রদানেঃ
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।