সালাতে (নামাযে) সূরার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা কতটুকু জরুরী এবং প্রথম রাকাতে বড় সূরা এবং পরের রাকাতে ছোট সূরা পড়ার বিষয়ে বিধি-বিধান কেমন হবে সে বিষয়ে আলোচনা।
প্রশ্ন: নামাযে সূরা পড়ার ক্ষেত্রে সূরা সমূহের ধারবাহিকতা রক্ষা না করলে কি নামায শুদ্ধ হবে না? আর আগের রাকাআতে ছোট সূরা এবং পরের রাকাআতে বড় সূরা পড়লে কি নামায বাতিল হয়ে যাবে বা সুন্নত লঙ্ঘণ করার কারণে গুনাহগার হতে হবে?
উত্তরঃ সালাতে কিরাআত পড়ার ক্ষেত্রে উত্তম হল, কুরআনের সূরার সমূহের ধারবাহিকতা রক্ষা করা (অর্থাৎ আগের সূরা আগে এবং পরেরটা পরে পড়া)।
এবং ১ম রাকাআতে বড় সূরা পড়লে তার পরের রাকাআতে তুলনা মূলক ছোট সূরা পড়া। তবে এর ব্যতিক্রম হলেও সালাত শুদ্ধ হবে। কেননা, কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنَ الْقُرْآنِ
“তোমার কুরআনের যেখান থেকে সুবিধা হয় পড়ো।”
সূরা মুযাম্মিল: ২০
সূরা আগে পরের করবার বিষয়ে হাদিস
তাছাড়া হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই রাকাআতে সূরা নিসা পড়ার পর সূরা আলে ইমরান পাঠ করেছেন। অথচ কুরআনের ধাবাবাহিকতা অনুযায়ী সূরা সূরা আলে ইমরানের পরে সূরা নিসা এর অবস্থান। হাদীস:
عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً فَافْتَتَحَ الْبَقَرَةَ فَقُلْتُ يَرْكَعُ عِنْدَ الْمِائَةِ فَمَضَى فَقُلْتُ يَرْكَعُ عِنْدَ الْمِائَتَيْنِ فَمَضَى فَقُلْتُ يُصَلِّي بِهَا فِي رَكْعَةٍ فَمَضَى فَافْتَتَحَ النِّسَاءَ فَقَرَأَهَا ثُمَّ افْتَتَحَ آلَ عِمْرَانَ فَقَرَأَهَا يَقْرَأُ مُتَرَسِّلاً
হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একরাত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সালাত আদায় করলাম। তিনি সূরা বাকারা শুরু করলেন, আমি মনে মনে বললাম যে, হয়তো তিনি একশত আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করে থেমে যাবেন। কিন্তু তিনি তিলাওয়াত চালিয়েই যেতে থাকলেন, আমি মনে মনে বললাম, হয়তো তিনি দু’শত আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করে রুকুতে যাবেন, কিন্তু তিনি তিলাওয়াত চালিয়েই যেতে থাকলেন। আমি মনে মনে বললাম, হয়তো তিনি পূর্ণ সূরা এক রাকআতেই তিলাওয়াত করে ফেলবেন। কিন্তু তিনি তিলাওয়াত চালিয়ে যেতে থাকলেন এবং সূরা “নিসা” শুরু করে তাও তিলাওয়াত করে ফেললেন। তারপর সূরা “আলে ইমরান” ও শুরু করে তাও তিলাওয়াত করে ফেললেন। তিনি ধীরে ধীরে তিলাওয়াত করতেন।”
সহীহ। সহীহ আবু দাউদ হাঃ ৮১৫, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হা/ ১৬৯১)
যা বুঝা গেলো
সুতরাং যথাসম্ভব ধারাবাহিকতা এবং বড়-ছোটর বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে কখনও এর ব্যতিক্রম হলেও ইনশাআল্লাহ সালাত শুদ্ধ হবে এবং তাতে কোন গুনাহ নেই।
আল্লাহু আলাম।
আরও পড়ুনঃ টুপি-পাগড়ি ছাড়া সালাত আদায় করা কি মাকরূহ?
▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব