April 26, 2024
#সিয়াম

রমাযান বিষয়ক কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ হাদীস

রমাযান, মুসলিমের জীবনে প্রতি বছর ফিরে ফিরে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক মাস। আসুন, আমরা রমাযান বিষয়ক কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ হাদীস জানি।

কখন সিয়াম (রোজা) শুরু করতে হবে?

عن ابن عمر رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «لا تصوموا حتى تروا الهلال ولا تفطروا حتى تروه فإن أغمي عليكم فاقدروا له»
(رواه البخاري ومسلم)

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,“তোমরা চাঁদ না দেখে রোযা রাখবে না এবং চাঁদ না দেখে রোযা ভঙ্গ করবে না। তবে যদি (শাবান মাসের ২৯ তারিখে) আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে (শাবান মাস) ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।”

বুখারী ও মুসলিম

রমাযানের এক-দুদিন আগে সিয়াম পালন না করাঃ

عن أبي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم «لا يتقدمن أحدكم رمضان بصوم يوم أو يومين، إلا أن يكون رجل كان يصوم صومه، فليصم ذلك اليوم»
(رواه البخاري ومسلم)

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমাদের কেউ যেন এক-দুদিন আগে থেকে রামাযান শুরু না করে। তবে তবে কেউ যদি আগে থেকে নফল রোযা রাখে তাহলে সে রামাযানের এক-দুদিন আগে তার সেই রোযা রাখতে পারে।”

বুখারী ও মুসলিম

রমাযান এ সুখবরঃ

عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «إذا جاء رمضان فتحت أبواب الجنة وغلقت أبواب النار وصفدت الشياطين»
(رواه مسلم)

আবুহুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,“যখন রামাযান মাস আগমন করে তখন জান্নাতের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়,জাহান্নামের দরজা সমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদেরকে শিকল পরানো হয়।”

সহীহ মুসলিম

রমাযান এ শয়তানের অবস্থা ও সুখবর ঘোষণাঃ

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إذا كان أول ليلة من شهر رمضان صفدت الشياطين، ومردة الجن، وغلقت أبواب النار، فلم يفتح منها باب، وفتحت أبواب الجنة، فلم يغلق منها باب، وينادي مناد: يا باغي الخير أقبل، ويا باغي الشر أقصر، ولله عتقاء من النار، وذلك كل ليلة»
(رواه الترمذي وصححه الألباني)

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,“রমযান মাসের প্রথম রাতের আগমন ঘটলে শয়তান ও অবাধ্য জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়-এ মাসে আর তা খোলা হয় না। আর জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়,এ মাসে সেগুলো আর বন্ধ করা হয় না।
আর প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ ঘোষণা দিতে থাকে যে, হে কল্যাণ প্রত্যাশী,তুমি অগ্রসর হও! হে অসৎ অন্যায় প্রত্যাশী তুমি থেমে যাও!
এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা বহু মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।”

তিরমিযী,সহীহ-আলবানী

এ মাসে উমরা করাঃ

عَنْ سَهْلٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ يُقَالُ أَيْنَ الصَّائِمُونَ فَيَقُومُونَ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ فَإِذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ
(رواه البخاري ومسلم)

عن ابن عباس رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «عمرة في رمضان تعدل حجة»
(رواه البخاري)

ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “রমাযান মাসে একটি উমরা হজ্জের সমপরিমান।”

সহীহ বুখারী

সিয়াম পালনকারীর মর্যাদাঃ

عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: « قال الله عز وجل: كل عمل ابن آدم له إلا الصيام، فإنه لي وأنا أجزي به، والصيام جنة، فإذا كان يوم صوم أحدكم، فلا يرفث يومئذ ولا يصخب، فإن سابه أحد أو قاتله، فليقل: إني امرؤ صائم، والذي نفس محمد بيده، لخلوف فم الصائم أطيب عند الله، يوم القيامة، من ريح المسك»
(رواه البخاري ومسلم)

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,আল্লাহ তাআলা বলেছেন,“রোযা ছাড়া বনী আদমের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য। রোযা শুধু আমার জন্য।আমিই তার প্রতিদান দেব।
রোযা হল ঢাল। সুতরাং তোমাদের মাঝে যে রোযা রাখে সে যেন অশ্লীল আচরণ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। যদি তার সাথে কেউ ঝগড়া-বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায় তবে তাকে বলে দেবে,আমি রোযাদার।
ঐ সত্ত্বার শপথ! যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ মিশকের চেয়েও অধিক সুগন্ধিময়।”

বুখারী ও মুসলিম

আরও পড়ুনঃ রমাযানের গুরুত্ব

সংকলনেঃ
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা