Tag: সাদাকা

  • মৃতের উদ্দেশ্যে দান-সদাকা বনাম খাওয়ানো!

    মৃতের উদ্দেশ্যে দান-সদাকা বনাম খাওয়ানো!

    প্রশ্নঃ মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে দান-সদাকা করা উত্তম না কি লোকজনকে খাওয়ানো উত্তম? কোন কাজটি সুন্নাহ সম্মত?

    এছাড়া আমাদের সমাজে মৃতের উদ্দেশ্যে ৩দিনের মাথায়, ৭দিনের মাথায়, ৪০ দিনের মাথায় এমনকি প্রতি বছরে মৃত্যু বার্ষিকী পালন করে মানুষ খাওয়ানো হয়। এগুলি কি সঠিক হবে?

    উত্তরঃ মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে দান-সদকা করা সহীহ সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। এ ক্ষেত্রে অধিক উত্তম হল, এমন জিনিস দান করা যা থেকে মানুষ দীর্ঘ দিন উপকৃত হতে পারে।

    যা দান-সদাকা করা ভালোঃ

    টিউবওয়েল বসানো বা পানির ব্যবস্থা করা, জমিন ওয়াকফ করা, মসজিদ নির্মান, মসজিদে ফ্যান, ওযুখানা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা, কুরআন, কুরআনের তাফসীর, সহীহ বুখারী, মুসলিম ইত্যাদি ইসলামী বই-পুস্তক দান করা… ইত্যাদি।

    দান-সদাকা না করে যা করলে বরং গুনাহ হতে পারেঃ

    পক্ষান্তরে সমাজে প্রচলিত মৃত্যুু বরণের ৩য় দিন, ৭ম দিন, চল্লিশতম দিন (চল্লিশা/চেহলাম), বছরান্তে (মৃত্যু বার্ষিকী), শবীনাখানী বা কুরআনখানী, কুলখানী ঈসালে সওয়াব বা সওয়াব রেসানী, মিলাদ মাহফিল, ভোজ সভার আয়োজন করা (লোকজনকে খাওয়ানো)…এ কাজগুলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম থেকে প্রমাণিত নয়। তাই বিজ্ঞ আলেমদের মতে এগুলো বিদআতের অন্তর্ভূক্ত।

    সুতরাং এগুলো অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ প্রতিটি বিদআতই গোমরাহী আর প্রতিটি গোমরাহীর পরিণতি জাহান্নাম।

    মৃত ব্যক্তিদের প্রতি জীবিতদের দায়িত্ব-কতর্ব্য

    আল্লাহ আমাদেরকে সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার এবং বিদআত পরিত্যাগ করা তাওফিক দান করুন। আমীন।

    আল্লাহু আলাম।

    উত্তর প্রদানেঃ
    আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
    (লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
    দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।


  • রমাদানের শেষ দশকে দৈনিক ১টাকা দান!

    রমাদানের শেষ দশকে দৈনিক ১টাকা দান!

    সম্প্রতি সময়ে হঠাৎই দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে রমাদানের শেষ দশকে প্রতিদিন ১টাকা/রিয়াল দান করবার এবং দুই রাকাত নফল সালাত আদায় ও এর ব্যাপক ফজিলতের কথা বর্ণনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ইসলাম কি বলে?

    সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ‘রমাযানের শেষ দশকের প্রতি রাত্রে কমপক্ষে এক রিয়াল (টাকা) করে দান, দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়া…​’ সংক্রান্ত মেসেজের যথার্থতা​

    এ প্রসঙ্গে সৌদি আরবের বিশিষ্ট দাঈ ও আলেমে দ্বীন শাইখ যায়েদ বিন মুসফির আল বাহরি এর বক্তব্যের সার-সংক্ষেপঃ

    “সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘রমাযানের শেষ দশকের প্রতি রাত্রে এক রিয়াল (টাকা) করে দান, দুই রাকাত করে নামাজ বা যেকোনো সৎকর্ম করার নির্দেশনা সম্বলিত একটি মেসেজ লেনদেন হচ্ছে। বলা হচ্ছে, যদি তা লাইলাতুল কদর এর মধ্যে পড়ে তাহলে ৮৪ বছর সদকা বা ইবাদত করার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।”

    এটা বিদআত-এ ব্যাপারে কোন দলিল আসে নি।

    আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

    مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ
    “যে ব্যক্তি দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন নতুন জিনিষ চালু করল তা পরিত্যাজ্য।

    বুখারী, অধ্যায়: সন্ধি-চুক্তি

    তিনি আরও বলেন, হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন আর রমাযান মাসে অধিক দানশীল হয়ে যেতেন।

    সহীহ বুখারী

    সুতরাং দানের জন্য কোন সময় বা পরিমাণ নির্দিষ্ট করবেন না। (বরং সারা রমাযান ব্যাপী যথাসাধ্য দান-সদকা ও নেকির কাজ করুন)।

    উৎস: https://bit.ly/3cD7m6M
    ——————-
    শাইখ যায়েদ বিন মুসফির আল বাহরি​
    অনুবাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল