সন্তান কিংবা গর্ভ হারানো সবরকারী বাবা-মায়ের জন্য সুসংবাদ!
এ কথা বিদিত যে, কাফের কুফরীর কারণে জাহান্নামে যাবে, আর মুমিন ঈমানের কারণে যাবে জান্নাতে। কিন্তু তাদের অবস্থা কী হবে, যাদের কুফরী শু ঈমান নেই। শিশু, পাগল ও এমন মানুষ, যার কাছে ইসলামের দাওয়াত আদৌ পৌছেনি, তার অবস্থা পরকালে কী হবে? মুমিনদের শিশু জান্নাতী পিতা-মাতার সাথে জান্নাতে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন,
وَالَّذِينَ آمَنُوا وَاتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَانٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَا أَلَتْنَاهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّن شَيْءٍ ۚ كُلُّ امْرِئٍ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ
অর্থঃ যারা ঈমান আনে আর তাদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা ঈমানের সাথে তাদের অনুসরণ করে, তাদের সাথে মিলিত করব তাদের সন্তান-সন্ততিকে এবং তাদের কর্মফল আমি কিছুমাত্র হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়বদ্ধ।
তুরঃ ২১
ঐ শিশুরা শুধু জান্নাতে যাবে তাই নয়, বরং পিতা-মাতা জাহান্নামে যাওয়ার হকদার হলে, মহান আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে তাদেরকে জান্নাতে নেওয়ার চেষ্টা করবে।
নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
“সেই সত্তার শপথ; যার হাতে আমার প্রাণ! গর্ভচ্যুত (মৃত) শিশু তার নাভির নাড়ী ধরে নিজের মাতাকে বেহেস্তের দিকে টেনে নিয়ে যাবে, যদি ঐ মা (তার গর্ভপাত হওয়ার সময়) ঐ সওয়াবের আশা রাখে তবে।”
সহীহ ইবনে মাজাহঃ ১৩০৫
অন্য এক বর্ণনা অনুযায়ী,
“সে তার পিতা-মাতার কাপড় ধরে জান্নাতে নিয়ে যাবে।”
সিলসিলা আস-সহীহাহঃ ৪৩২
নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
যে মহিলার তিনটি শিশু মারা যাবে, সেই মহিলার জন্য ঐ শিশুরা জাহান্নাম থেকে পর্দা স্বরূপ হবে।” এক মহিলা বলল, আর দুটি মারা গেলে?” তিনি বললেন, “দুটি মারা গেলেও। (তারা তার মায়ের জন্য জাহান্নাম থেকে পর্দা হবে।)”
সহীহ বুখারীঃ ১০১ নং, মুসলিমঃ ২৬৩৩
বলাই বাহুল্য যে, যে অপরের জন্য জাহান্নামের পর্দা হবে, সে কি জাহান্নামে যাবে? বরং উভয়েই জান্নাতে যাবে। আর এ কথা স্পষ্টভাবে একাধিক হাদীসেও এসেছে যে, মুমিনদের শিশু-সন্তানরাও জান্নাতে যাবে। ফাতহুল বারীঃ ৩/২৪৫।
এই শিশুরা পিতামাতার জন্য জান্নাতে পূর্ব-প্রেরিত ব্যবস্থাপকের মত হবে। তারা ইব্রাহীম নবী আ’লাইহি সালামের তত্ত্বাবধানে মধ্যজগতে বাস করবে।
তবে নির্দিষ্টভাবে কোন শিশুকে জান্নাতী বলে আখ্যায়ন করা যাবে না। যেমন জান্নাতের কাজ করলেও নির্দিষ্ট করে কোন মুসলিমকে জান্নাতী বলে বিশ্বাস করা যাবে না। মাজমূউ ফাতাওয়াঃ ৪/২৮১।
পক্ষান্তরে কাফেরদের শিশু-সন্তান, অনুরূপ যারা প্রকৃতই ইসলাম সম্পর্কে কিছু জানেনি, শুনেনি তাদের কাছে এবং পাগলদের কাছে কিয়ামতে আল্লাহর আনুগত্যের উপর এক পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাতে যারা উত্তীর্ণ হবে, তারা জান্নাতবাসী এবং অবশিষ্ট দোযখবাসী হবে। তাফসীর ইবনে কাসীর ৩/২৯-৩২।
আরও পড়ুনঃ শিশুদের ইসলাম ও তাওহিদ শিক্ষার ১১ উপায়
_____________________________________
লেখকঃ শায়খ আব্দুল হামিদ ফাইজী হা’ফিজাহুল্লাহ
উতস গ্রন্থঃ জান্নাত জাহান্নাম
লেখাটি নেওয়া হয়েছেঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও